নেতাকর্মীদের চাঙা করতে বিএনপি’র ৩ সংগঠনের ‘রোডমার্চ’


নিজস্ব প্রতিবেদক

আরটিএনএন

ঢাকা: সরকার পতনের একদফা দাবিতে দীর্ঘদিন ধরেই রাজপথে আন্দোলনে আছে বিএনপি ও সমমনা রাজনৈতিক দলগুলো। দাবি আদায়ে সরকারকে বাধ্য করতে এবার টানা কর্মসূচি নিয়ে মাঠে নামছে তারা। কর্মসূচিতেও আনছে ভিন্নতা। চূড়ান্ত আন্দোলনের আগে ওয়ার্মআপ কর্মসূচি হাতে নিয়েছে বিএনপি’র তিন অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠন। ভোটাধিকার বঞ্চিত তরুণদের টার্গেটের পাশাপাশি দলের নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষদের উজ্জীবিত করতে দেশের ছয় বিভাগে ‘তারুণ্যের রোডমার্চ’ করবে তারা। এছাড়া অক্টোবর থেকে শুরু হবে ঢাকা কেন্দ্রিক কর্মসূচি। এসব কর্মসূচি বাস্তবায়নে জেলার নেতাদের সর্বশক্তি নিয়োগের বার্তা দেয়া হবে রোডমার্চ থেকে।

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার ঢাকা বারে পদযাত্রা করবে জাতীয়তাবাদী আইনজীবীরা। আগামী ১৫ই সেপ্টেম্বর শুক্রবার রাজধানীর নয়াপল্টনে সমাবেশ করবে বিএনপি। সমাবেশের অনুমতি চেয়ে ইতিমধ্যে ডিএমপিতে চিঠি দিয়েছে দলটি। পরদিন ১৬ই সেপ্টেম্বর থেকে ৩০শে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত দেশের পাঁচ বিভাগে ‘তারুণ্যের রোডমার্চ’ কর্মসূচি চূড়ান্ত করা হয়েছে।

পাঁচ বিভাগের পর ঢাকা বিভাগে সর্বশেষ রোডমার্চ করবে। এসব রোডমার্চ বাস্তবায়নে নেতৃত্ব দেবে বিএনপির তিন অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠন যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদল। ইতিমধ্যে ঢাকা বিভাগ বাদে পাঁচ বিভাগের রোডমার্চের সম্ভাব্য রুট ও তারিখ চূড়ান্ত করেছে তারা। রুটগুলো হলো- আগামী ১৬ই সেপ্টেম্বর রংপুর থেকে সৈয়দপুর দশমাইল হয়ে দিনাজপুর, ১৭ই সেপ্টেম্বর বগুড়া থেকে সান্তাহার-নওগাঁ হয়ে রাজশাহী, ২১শে সেপ্টেম্বর ভৈরব থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া- হবিগঞ্জ- মৌলভীবাজার হয়ে সিলেট, ২৬শে সেপ্টেম্বর ঝিনাইদহ থেকে যশোর-নোয়াপাড়া হয়ে খুলনা এবং ৩০শে সেপ্টেম্বর কুমিল্লা থেকে ফেনী-মিরসরাই হয়ে চট্টগ্রাম পর্যন্ত। সোমবার রাতে অনুষ্ঠিত বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে এই কর্মসূচির অনুমোদন দেয়া হয়। আজ মঙ্গলবার নয়াপল্টনে সংবাদ সম্মেলন করে এসব কর্মসূচির ঘোষণা দেয়া হবে বলে জানিয়েছে দলীয় সূত্র।

এদিকে তারুণ্যের রোডমার্চের পর অক্টোবরের শুরুতেই ঢাকায় মহাসমাবেশের ঘোষণা আসতে পারে। সেই মহাসমাবেশ থেকে তত্ত্বাবধায়কের অধীনে নির্বাচনের দাবি মেনে নিতে সরকারকে সময় বেধে দেয়া হতে পারে। এরপর ধারাবাহিকভাবে কঠোর কর্মসূচির চিন্তা করছে বিএনপি। ওদিকে গতকাল ডেঙ্গু সচেতনতা বাড়াতে তিনদিনব্যাপী লিফলেট বিতরণ কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বিএনপি। মঙ্গলবার থেকে আগামী বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ঢাকাসহ দেশের সকল মহানগরে এই কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হবে। এসব কর্মসূচিতে অংশ নেবেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ দলের কেন্দ্রীয় নেতারা। ওদিকে রোডমার্চ বাস্তবায়নে ইতিমধ্যে প্রস্তুতি সভা করেছে যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদল। গতকাল বিকালে বগুড়ায় প্রস্তুতি সভা অনুষ্ঠিত হয়। ধারাবাহিকভাবে আরও কয়েকটি প্রস্তুতি সভা করবে তারা।

বিএনপির সিনিয়র একাধিক নেতা জানান, এর আগে গত জুনে দেশের ছয় বিভাগে 'দেশ বাঁচাতে তারুণ্যের সমাবেশ' করেছিল যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদল। এরপর ২৮শে জুলাই ঢাকায় মহাসমাবেশ থেকে সরকার পতনের একদফা ঘোষণা করেছিল বিএনপি। সেসময় কর্মসূচিগুলোতে দলের নেতাকর্মীদের পাশাপাশি ব্যাপক সংখ্যক সাধারণ মানুষের অংশ নিয়েছিল। এবারও জেলাপর্যায়ের নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষকে উজ্জীবিত করতে তারুণ্যের রোডমার্চ করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এছাড়া অক্টোবর থেকে সরকার পতনের দাবিতে রাজধানীতে কঠোর কর্মসূচি আসছে। ঢাকাকেন্দ্রিক টানা কর্মসূচি বাস্তবায়ন করতে না পারলে আন্দোলনের চূড়ান্ত ফলাফল ঘরে তোলা যাবে না। তাই এবার অনেকটা আঁটঘাট বেঁধেই নামবে বিএনপি। পরিকল্পনা বাস্তবায়নে কোন ধরনের ফাঁকফোকর রাখতে চাইছে না দলটির হাইকমান্ড।

ছাত্রদলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রাশেদ ইকবাল খান বলেন, বর্তমান সমাজের তরুণরা শৃঙ্খলিত হয়ে আছে। তাদের ভোটাধিকার হরণ করা হয়েছে। ক্যাম্পাসগুলোতে শিক্ষার কোনো পরিবেশ নেই। দেশে বেকার তরুণদের হার দিনদিন বাড়ছে। তারা চাকরি পাচ্ছে না। এসব তরুণ তাদের অধিকার আদায়ের জন্য মুখিয়ে আছে। প্রয়োজনে রক্ত দিয়ে হলেও তাদের অধিকার আদায় করবে। দেশের গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করবে।