সোনাগাজীতে নুসরাতের জানাজায় জনতার ঢল, কান্নার রোল
নিজস্ব প্রতিনিধি
আরটিএনএন
ঢাকা: হাজার হাজার মুসল্লির অংশগ্রহণে নামাজের জানাজা শেষে মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফির লাশ পারিবারিক গোরস্থানে দাফন করা হয়েছে।
এর আগে বিকেল ৫টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতাল থেকে লাশবাহী অ্যাম্বুলেন্স নুসরাতের গ্রামের বাড়িতে পৌঁছালে সেখানে হাজার হাজার মানুষ ভিড় জমায়। এসময় স্বজনদের হাউমাউ করে কাঁদতে দেখা যায়, সবার চোখেই পানি, কান্নার রোল পড়ে যায়। সেখানে এক অন্যরকম হৃদয় বিদারক দৃশ্যের অবতারণা হয়।
পরে বিকেল পৌনে ৬টার দিকে সোনাগাজী মো. সাবের সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে অনুষ্ঠিত হয়। নামাজের জানাজা পড়ান নুসরাতের বাবা মাওলানা মুসা। জানাজা শেষে নুসরাতকে তার পারিবারিক করররস্থানে দাদীর কবরের পাশে দাফন করা হয়।
জানাযায় উপস্থিত ছিলেন- আওয়ামী লীগ নেতা ও ফেনী ইউনিভার্সিটির ট্রাস্টি বোর্ডের সভাপতি আলাউদ্দিন নাসিম, জেলা প্রশাসক মো. ওয়াহিদুজ্জামান, পুলিশ সুপার এস এম জাহাঙ্গীর আলম সরকার, অতিরিক্ত জেলা প্রসাশক এনামুল করিম, সোনাগাজী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান জহির উদ্দিন মাহমুদ লিপটন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সোহেল পারভেজসহ প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
এছাড়াও আশপাশের এলাকা থেকে কয়েক হাজার মানুষ জানাজায় অংশগ্রহণ করেন।
এর আগে ঢামেক হাসপাতাল মর্গে নুসরাতের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়। পরে মরদেহ তার পরিবারের সদস্যদের কাছে হস্তান্তর করা হয়। সকালে নুসরাতের ময়নাতদন্তের জন্য তিন সদস্যের মেডিকেল বোর্ড গঠন করে ঢামেক হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
ময়নাতদন্ত শেষে ঢামেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল একেএম নাসির উদ্দিন বলেন, বড় ধরনের বার্নের কারণেই নুসরাতের মৃত্যু হয়েছে। তবে তার চিকিৎসায় সবধরনের চেষ্টাই করা হয়।
‘ময়নাতদন্তে হাসপাতালের চিকিৎসকরা তার (নুসরাত) ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করেছেন। অন্যান্য নমুনাও সংগ্রহ করা হয়েছে। এসব নমুনার প্রতিবেদন পেলেই ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন প্রকাশিত হবে।’
প্রসঙ্গত, গত ৬ এপ্রিল সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসায় আলিম পরীক্ষার কেন্দ্রে গেলে মাদ্রাসার ছাদে ডেকে নিয়ে নুসরাতের গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে পালিয়ে যায় মুখোশধারী দুর্বৃত্তরা।
এর আগে মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদ-দৌলার বিরুদ্ধে করা শ্লীলতাহানীর মামলা প্রত্যাহারের জন্য নুসরাতকে চাপ দেয় তারা।
পরে আগুনে ঝলসে যাওয়া নুসরাতকে প্রথমে স্থানীয় হাসপাতালে এবং পরে ঢামেক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তার চিকিৎসায় গঠিত হয় নয় সদস্যের মেডিকেল বোর্ড। কিন্তু শত চেষ্টা করেও বাঁচানো গেল নুসরাতকে। বুধবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে তার মৃত্যু হয়।