ইসলামিক প্রশ্নের উত্তর দেয়ার নীতি নিয়ম


আন্তর্জাতিক ডেস্ক

আরটিএনএন

ইসলামাবাদ: আমাদের সকলেই কোন না কোন সময় আমাদের ধর্ম সম্পর্কে কিছু প্রশ্নের মুখোমুখি হয়ে থাকি। কখনো আমরা এমন প্রশ্ন সমূহের সম্মুখীন হই কৌতূহলী অমুসলিম বিশ্বাসী বা এমন কোনো মুসলিম যিনি ধর্ম সম্পর্কে তেমন জ্ঞান রাখেন না অথবা এমন কোনো নাস্তিক যে ইসলাম ধর্মের বিরুদ্ধে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেয় তাদের দ্বারা।

একজন ব্যক্তি কিভাবে এমন পরিস্থিতির প্রতিক্রিয়া দেখাবেন তা আসলে খুব গুরুত্বপূর্ণ একই সাথে তার উত্তর দ্বারা প্রশ্নকারী ব্যাপক প্রভাবিত হয়ে থাকতে পারেন। অনেক সময় কিছু মুসলিম অযত্নের সাথে এমন ভাবে উত্তর দেন যা পরিস্থিতি কে ভিন্ন দিকে প্রবাহিত করে।

পবিত্র কুরআনে কিভাবে ইসলাম সম্পর্কে অন্যের সাথে যোগাযোগ করা হবে তার দিকনির্দেশনা দেয়া রয়েছে। নবী মুহাম্মদ(সা:) কে তার মিশন সফল করার জন্য লোকজনদের কে দাওয়াত দেয়ার সময় পবিত্র কুরআনের আয়াত সমূহ উল্লেখ করার জন্য বলা হয়েছে।

নবী মুহাম্মদ(সা:) তার সারা জীবন পবিত্র কুরআনের উপর অটল থেকে কাটিয়েছেন এবং তার দাওয়াতি কার্যক্রমের সময় যেকোনো প্রশ্নের উত্তর পবিত্র কুরআনের আলোকে দেয়া তার প্রতিদিনকার চর্চায় পরিণত হয়েছিল।

পবিত্র কুরআনে দাবী করা হয়েছে যে, এমন কোনো প্রশ্ন নেই যার উত্তর পবিত্র কুরআনে নেই। পবিত্র কুরআনের সূরা আল ফুরকানের ৩৩ নম্বর আয়াতে বলা হয়েছে, ‘তারা আপনার কাছে কোন সমস্যা উপস্থাপিত করলেই আমি আপনাকে তার সঠিক জওয়াব ও সুন্দর ব্যাখ্যা দান করি।’

আর যারা ইতিহাসের পাঠ নিয়েছে তারা জানে যে, শতাব্দী যাবত নাস্তিক, অমুসলিম অথবা মুসলিমদের নিকট থেকে যে কোনো ধরনের প্রশ্নের উদ্ভব হোক না কেন তার উত্তর পবিত্র কুরআনের আলোকে প্রদান করা শ্রেয়।

সিয়াম সাধনার কথাই ধরুন। একটি প্রশ্ন আসতে পারে যেমন, ‘কেন সিয়াম সাধনা করেন?’ যেসব মুসলিমদের সাথে অমুসলিমদের যোগাযোগ হয় তারা প্রায়শ এই প্রশ্নটির মুখোমুখি হন।

একই সাথে বর্তমান মুসলিম তরুণ সমাজ এবং শিশুরা যেকোনো কিছু অন্ধ ভাবে অনুসরণ করতে চান না বরং তারা সঠিক বিষয়টি জানার জন্য বড়দের কে বিভিন্ন প্রশ্ন করে থাকেন।

এই প্রশ্নটির কিছু সাধারণ উত্তর হচ্ছে: যার প্রতিনিয়ত ক্ষুধার্ত এবং তৃষ্ণার্ত থাকে তাদের কষ্ট বুঝার জন্য। সিয়াম সাধনার অনেক স্বাস্থ্যগত উপকার রয়েছে যা আধুনিক বিজ্ঞান স্বীকার করে নিয়েছে। কিন্তু অতি দ্রুত এসব উত্তর প্রধান করার বিষয়টি পবিত্র কুরআন থেকে আসেনি।

এমনকি তর্কের খাতিরে ধরে নিলেও, শুধুমাত্র ক্ষুধার্তদের কষ্ট বা স্বাস্থ্যগত উপকারের জন্য ইসলাম সিয়াম সাধনা করতে বলেছে? পবিত্র কুরআন সিয়াম সাধনাকে তাকওয়া বা আল্লাহ ভীতি অর্জনের উপায় হিসেবে বর্ণনা করে একে অবশ্য পালনীয় করেছে।

পবিত্র কুরআনের সুরা বাকারা এর ১৮৩ নং আয়াতে বলা হয়েছে, ‘হে ঈমানদারগণ! তোমাদের উপর রোজা ফরয করা হয়েছে, যেরূপ ফরজ করা হয়েছিল তোমাদের পূর্ববর্তী লোকদের উপর, যেন তোমরা তাকওয়া অর্জন করতে পার।’

এসব প্রশ্নের উত্তর দেয়ার বিষয়ে মুসলিম জনগণের উদ্যোগ ভুল নয়। তারা তাদের সবচেয়ে ভালো উপায়ে তাদের ধর্ম কে অন্যের সামনে তুলে ধরতে চায়।

বৃহৎ অর্থে, পবিত্র কুরআন একটি ধর্মীয় গ্রন্থ এটি বিজ্ঞান বা চিকিৎসার কোনো গ্রন্থ নয় কিন্তু এই মহা গ্রন্থ একই সাথে বিজ্ঞান, দর্শন, চিকিৎসা, অর্থনীতি ইত্যাদি নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে।

পবিত্র কুরআনে সুদ কে নিষিদ্ধ করা হয়েছে কিন্তু অর্থনীতির অন্যান্য বিষয়াদি নিয়ে গবেষণা করার জন্য মানুষকে উৎসাহ দেয়া হয়েছে।

ধর্ম চর্চার উদ্দেশ্য বস্তুগত নয় বরং আধ্যাত্মিক। উদাহরণ সরূপ পবিত্র কুরআন শুধুমাত্র স্বাস্থ্যগত ক্ষতির জন্য এলকোহল নিষিদ্ধ করে নি বরং এলকোহল পানের ফলে একজনের বিচার বুদ্ধি এবং বাস্তবতা বুঝার ক্ষমতা লোপ পায় এ জন্য নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

সত্যিকার অর্থে ইসলামিক বিষয়ে উত্তর দেয়ার ক্ষেত্রে মনে রাখতে হবে ইসলাম একজন ব্যক্তির আধ্যাত্মিক উন্নতি সাধনে সহায়তা করে। আর ধর্মের উদ্দেশ্য এর চাইতে বেশীও নয় কমও নয়।

সূত্র: পাকিস্তানটুডে ডট কম।