‘ধর্ষকদের রুখতে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে’


নিজস্ব প্রতিবেদক

আরটিএনএন

ঢাকা: ঢাকার দক্ষিণ কেরাণীগঞ্জ থানাধীন মীরেরবাগ এলাকার বাসিন্দা এক নারীকে ধর্ষণের ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন নারী ও শিশু অধিকার ফোরামের আহ্বায়ক সেলিমা রহমান ও সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট নিপুণ রায় চৌধুরী।

আজ শুক্রবার (১১ সেপ্টেম্বর) এক যৌথ বিবৃতিতে তারা বলেন, আমরা নারী ও শিশু অধিকার ফোরাম থেকে এ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।

ধর্ষিতার অভিযোগ অনুযায়ি অবিলম্বে ধর্ষণকারি ও মামলার আসামি চেয়ারম্যান ইকবাল হোসেন, তুহিন রেজা, পুলিশের সোর্স রাহাত, জিএম সারোয়ার, দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার পরিদর্শক (নিরস্ত্র), শাহদাত হোসেন, ওসি আশিকুর রহমান (তদন্ত) এবং ওসি শাহ জামানসহ দুষ্কৃতিকারীদের অবলিম্বে গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির জোর দাবি জানাচ্ছি।

বিবৃতিতে তারা আরও বলেন, দেশে আইনের শাসনের বিলুপ্তি ঘটিয়ে, গণতন্ত্রকে হত্যা করে নাৎসী কায়দায় দেশ পরিচালনার জন্য এখন সন্ত্রাসবাদের নির্দয় প্রতাপ চলছে। দুর্নীতি ও রক্তাক্ত সন্ত্রাসের ভাবধারায় অনুপ্রাণিত এই সরকার সারাদেশে অশান্তির বিষবাষ্প ছড়িয়ে দিচ্ছে। এটাই এখন বাংলাদেশের চিত্র। গত প্রায় ১২ বছর দেশে কোন আইনের শাসন নেই। যেটা আছে তা হচ্ছে দলীয় শাসন। আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ, যুবলীগসহ ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীরা অপরাধ করলেও বিচার হয় না। ফলে দেশে অরাজক পরিস্থিতি চলছে। এভাবে কোন দেশ চলতে পারে না। মা, বোনসহ দেশবাসীকে বলবো, যার যার অবস্থান থেকে প্রতিবাদ-প্রতিরোধ গড়ে তুলুন। তা না হলে আমি আপনি কিউই রক্ষা পাবো না।

বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়েছে, গত ৯ সেপ্টেম্বর বুধবার ঢাকার দক্ষিণ কেরাণীগঞ্জ থানাধীন মীরেরবাগ এলাকার ধর্ষিতা বাসিন্দা নিজেই নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল আদালত-৪ এর বিচারক তাবাসুম ইসলামের আদালতে মামলাটি দায়ের করেন। আদালত বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করে পুলিশকে তদন্ত করে প্রতিবদেন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন বলে বিবৃতিতে উল্লেখ করেন সেলিমা ও নিপুণ রায়।

বিবৃতি আরও উল্লেখ করা হয়েছে, মামলার এজাহারে বাদী ধর্ষিতা ওই নারী জানিয়েছেন, গত ৩০ জুন কেরানীগঞ্জ থানার পুলিশের সোর্স রাহাতের সহযোগিতায় বিউটি পার্লার থেকে মীরেরবাগ বাসায় ফেরারপথে রাতে তাকে অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে অপহরণ করে তিন দিন আটকে রাখে শুভঢ্যা ইউপি চেয়ারম্যান ইকবাল হোসেন, তুহিন রেজা, পুলিশের সোর্স রাহাত ও তেলঘাটের জিএম সারোয়ার।

এরপর তারা তাকে ধর্ষণও করেন বলে এজারে উল্লেখ করা হয়েছে। কেরানীগঞ্জ থেকে অপহরণ করে গত ২১ জুলাই রাজধানীর বিজয় নগর স্কাইভিউ টাওয়ারে একটি কক্ষে আটকে রেখে জোরপূর্বক তার কাছ থেকে অনেকগুলো কাগজ সাক্ষর করিয়ে নেওয়া হয়। এবং সেখানেও তাকে দ্বিতীয় দফায় র্ধষণ করা হয়।

কর্মজীবী এই নারীকে অপহরণ ও ধর্ষণের অভিযোগে ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত র্কমর্কতা (ওসি) শাহ জামানসহ সাতজনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। অভিযোগ অনুসারে, পরবর্তীতে তিনি ধর্ষকদের হাত থেকে মুক্তি পেয়ে গত ৫ জুলাই দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা দায়ের করেন। মামলার আসামি চেয়ারম্যান ইকবাল হোসেন ও জিএম সারোয়ার কেরানীগঞ্জে প্রভাবশালী হওয়ায় পুলিশ তাদের পক্ষ নিয়ে ওই মামলায় অভিযুক্তদের গ্রেফতার না করে মামলা তুলে নিতে তাকে চাপ সৃষ্টি করতে থাকে বলেও অভিযোগে বলা হয়।

সেলিমা রহমান ও নিপুন রায় চৌধুরী বিবৃতিতে বলেন, দেশে নারী ও শিশু থেকে শুরু করে বিরোধী মতের মানুষ কারো কোনজীবনের নিরাপত্তা নেই। আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতা ও জনপ্রতিনিধি থেকে শুরু করে ছাত্রলীগ-যুবলীগ এমন কি এখন সরাসরি প্রশাসনের ব্যক্তি দ্বারা প্রতিদিনই কোথাও না কোথাও নারী-শিশু র্ধষণ এবং ধর্ষণের পর হত্যা করা হচ্ছে। ধর্ষিতা নারী ও শিশুরা যাতে আইনের স্বরনাপন্ন না হতে পারে সেজন্য প্রভাব খাটিয়ে বিভিন্ন ধরণের ভয়ভীতি এমন কি হত্যারও হুমকি দেখানো হয়।