অনার্স সম্পন্নের আগেই মাস্টার্স পাস ইবি ছাত্রের!
নিজস্ব প্রতিনিধি
আরটিএনএন
কুষ্টিয়া: অনার্স সম্পন্ন না হতেই ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগ থেকে মাস্টার্স সম্পন্ন করেছেন এক শিক্ষার্থী। অবশ্য বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সরবরাহ করা সাময়িক সনদপত্রে তাকে কৃতকার্য দেখানো হয়েছে।
পরে বিষয়টি নজরে এলে তার উভয় সনদই বাতিল করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
মাস্টার্স সম্পন্নের চার বছর পর নিজের অকৃতকার্যতার কথা জানতে পেরে স্নাতক শেষ বর্ষের অকৃতকার্য কোর্সের পরীক্ষা দেয়ার জন্য আবেদন করেন ওই শিক্ষার্থী।
বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক সিন্ডিকেট সদস্য বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
জানা যায়, সনদ বাতিলকৃত ওই শিক্ষার্থীর নাম শামীরুল ইসলাম। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের ২০১৩-২০১৪ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। ২০১৭ সালে ওই শিক্ষার্থীর স্নাতক শেষ বর্ষের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। তার রোল নম্বর ছিল ১৩২১০৩৭। পরে স্নাতক শেষ বর্ষের ৪১৫ নম্বর কোর্সে ফেল করেন ওই শিক্ষার্থী। তবুও তিনি ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষে স্নাতকোত্তরে ভর্তি হন এবং ২০১৮ সালে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেন।
এদিকে, স্নাতক ও স্নাতকোত্তরের সাময়িক সনদপত্রও উত্তোলন করেন তিনি। সনদে তাকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর উভয় পরীক্ষায় কৃতকার্য দেখানো হয়।
এ বছরের জানুয়ারিতে মূল কাগজপত্র উত্তোলন করতে গিয়ে তিনি জানতে পারেন, অনার্সে একটি কোর্সে অকৃতকার্য হয়েছিলেন তিনি। পরে তিনি অকৃতকার্য সেই কোর্সে পরীক্ষার জন্য আবেদন করেন।
শামীরুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, ‘মূল কাগজপত্র উত্তোলন করতে গিয়ে আমি জানতে পারি অনার্সে একটি বিষয়ে অকৃতকার্য হয়েছিলাম। এ বিষয়টি আমাকে আগে জানানো হয়নি। এর আগে আমি পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক দফতর থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তরের সাময়িক সনদপত্র উত্তোলন করি। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে আমি সব ডকুমেন্ট উপস্থাপন করেছি।’
এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভিসি অধ্যাপক ড. মাহবুবুর রহমানকে আহ্বায়ক করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি করে কর্তৃপক্ষ। কমিটির প্রতিবেদন প্রদানের পর রোববার (২৮ মে) বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কাউন্সিলের সভায় ওই শিক্ষার্থীর দুই সনদই বাতিলের সুপারিশ করা হয়। এছাড়া স্নাতকের অকৃতকার্য হওয়া কোর্সের স্পেশাল পরীক্ষা গ্রহণ করার এবং এ পরীক্ষায় কৃতকার্য হওয়া সাপেক্ষে স্নাতকোত্তরে ভর্তির সুযোগ প্রদানের সুপারিশ করা হয়। সোমবার (২৯ মে) বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৫৮তম সিন্ডিকেট সভায় সুপারিশগুলোকে অনুমোদন করা হয়।
এ বিষয়ে প্রো-ভিসি অধ্যাপক ড. মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়া হয়। একাডেমিক কাউন্সিলের সভায় দুই সনদ বাতিল করে মানবিক দিক বিবেচনা করে তাকে পুনরায় পরীক্ষার গ্রহণের ব্যবস্থা করা হয়েছে।’