মালয়েশিয়া থেকে বহিষ্কার করা হলো রায়হান কবিরকে
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আরটিএনএন
কুয়ালালামপুর: মালয়েশিয়ায় করোনাভাইরাস মহামারির মধ্যে অভিবাসী শ্রমিকদের দুর্ভোগ নিয়ে সাক্ষাৎকার দেয়ার অপরাধে পুলিশের হাতে আটক বাংলাদেশী নাগরিক রায়হান কবিরকে সে দেশ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
মালয়েশিয়ার রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা বার্নামা জানিয়েছে, স্থানীয় সময় রাত নয়টার দিকে পুলিশ তাকে কুয়ালালামপুর আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ইমিগ্রেশন কর্মকর্তাদের হাতে তুলে দিয়েছে। খবর বিবিসি বাংলার
তাকে রাত ১১টায় মালয়েশিয়ান এয়ারলাইন্সের ঢাকাগামী বিমানে তুলে দেয়া হবে বলে বার্নামা জানাচ্ছে।
তাকে যখন বিমানবন্দরে হাজির করা হয় তখন তার কাঁধে ছিল একটি স্লিং ব্যাগ। তিনি সেখানে অপেক্ষমান সাংবাদিদের প্রতি হাত নেড়ে শুভেচ্ছা জানান।
ঢাকায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, তাকে মুক্ত করার ব্যাপারে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে কূটনৈতিক তৎপরতা ছিল। শেষপর্যন্ত মালয়েশিয়া সরকার রায়হান কবিরের বিরুদ্ধে কোন মামলা না দিয়ে তাকে বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেয় বলে তিনি উল্লেখ করেছেন।
বাংলাদেশে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ব্রাকের অভিবাসন কর্মসূচি রায়হান কবির গ্রেপ্তার হওয়ার পর থেকে তার আইনগত অধিকার নিয়ে কাজ করছিল।
ব্রাকের এই কর্মসূচির প্রধান শরিফুল হাসান জানিয়েছেন, বাংলাদেশ সময় রাত ১টার দিকে রায়হান কবিরের ঢাকায় পৌঁছানোর কথা রয়েছে। তারা তাকে ঢাকায় বিমানবন্দরে গ্রহণ করবেন। এরপর তারা পরিবারের সদস্যদের কাছে রায়হান কবিরকে পৌঁছে দেবেন।
সম্প্রতি আল জাজিরা টেলিভিশনে প্রচারিত একটি তথ্যচিত্রে রায়হান কবির বলেছিলেন যে অনিবন্ধিত বিদেশি শ্রমিকরা বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন, এবং ভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে শত শত অভিবাসীকে জেলে পাঠানো হয়েছে।
এরপর দুই সপ্তাহ ধরে খোঁজ করে পুলিশ গত মাসে রায়হান কবিরকে গ্রেফতার করে।
প্রায় ২৬ মিনিটের ঐ ডকুমেন্টারিতে মালয়েশিয়ায় আটকে পড়া অবৈধ শ্রমিকদের বেহাল দশার কথা তুলে ধরা হয়।
রায়হান কবির ঐ তথ্যচিত্রে এ সম্পর্কে কুয়ালালামপুর কর্তৃপক্ষের সমালোচনা করেছিলেন।
ঐ ডকুমেন্টারিতে বলা হয়, মহামারির মধ্যে মালয়েশিয়ার কর্তৃপক্ষ দু'হাজারেরও বেশি অনিবন্ধিত শ্রমিককে আটক করেছে এবং কঠোর ভাইরাস লকডাউনের মধ্যে তাদের আটকে রাখা হয়েছে।
ঐ ভিডিওটি প্রচারের পর থেকেই মালয় সোশাল মিডিয়াতে মি. কবিরের বিরুদ্ধে প্রবল সমালোচনা শুরু হয়।
এর জেরে কর্তৃপক্ষ তার ওয়ার্ক পারমিট বাতিল করে, এবং তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে।
তবে রায়হান কবির ঢাকা ফিরে এলে কর্তৃপক্ষ তার বিরুদ্ধে কোন ধরণের শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেবে কিনা তা এখনও পরিষ্কার না।
এর আগে বাংলাদেশের সরকারের একজন মন্ত্রী রায়হান কবিরের ব্যাপারে ইঙ্গিত করে বলেছিলেন যে সরকার এনিয়ে শ্রম বাজারকে ঝুঁকিতে ফেলতে চায় না।
বাংলাদেশের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ শ্রম বাজার মালয়েশিয়া। সরকারি হিসেবে মালয়েশিয়াতে ছয় লাখের মতো নিবন্ধিত শ্রমিক রয়েছে। এর বাইরে বেশ বড় সংখ্যায় অনিবন্ধিত শ্রমিকও রয়েছে বলে জানা যায়।