টিভিতে অভ্যুত্থানের ঘোষণা করলো নিজেরের সেনাবাহিনী


আন্তর্জাতিক ডেস্ক

আরটিএনএন

ঢাকা: পশ্চিম আফ্রিকার দেশ নিজেরের প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ বাজুম যিনি এক সামরিক অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত হয়েছেন তিনি সোশ্যাল মিডিয়ায় এক পোস্টে বলেছেন যে দেশটির কষ্টার্জিত অর্জনকে রক্ষা করতে হবে।

বুধবার রাত থেকেই তাকে আটক রাখা হয়েছে। কিন্তু কোথায় তা এখনও পরিষ্কার নয়। খবর বিবিসি বাংলার

তার পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাসুমি মাসুদু ইতোমধ্যে নিজেকে দেশের প্রেসিডেন্ট হিসেবে ঘোষণা করেছেন এবং সামরিক শাসনের বিরোধিতা করার জন্য জনগণের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।

তিনি ফরাসি মিডিয়াকে বলেছেন, এই অভ্যুত্থানে পুরো সেনাবাহিনীর সমর্থন নেই এবং আলোচনার মাধ্যমে পরিস্থিতি সামাল দেয়া যেতে পারে।

বুধবার সন্ধ্যায় একদল সামরিক কর্মকর্তা জাতীয় টেলিভিশন দখল করে এবং অভ্যুত্থানের ঘোষণা করে।

আন্তর্জাতিক অঙ্গনে এই সেনা অভ্যুত্থানের ব্যাপক নিন্দা হয়েছে।

প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ বাজুমকে এই অঞ্চলে ইসলামি জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে বিশেষ করে পশ্চিমা বিশ্বের প্রধান সহযোগী হিসেবে দেখা হয়।

সংবাদদাতারা জানাচ্ছেন, বুধবার রাতে টিভিতে এসে কর্নেল মেজর আমাদু আবদ্রামানে এবং তার সাথে থাকা আরও ন’জন ইউনিফর্মধারী অফিসার বলেন, আমরা প্রতিরক্ষা এবং নিরাপত্তা বাহিনী ... আপনাদের চেনা শাসনের অবসান ঘটানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছি।

নিরাপত্তা পরিস্থিতির ক্রমাগত অবনতি এবং দুর্বল অর্থনৈতিক ও সুশাসনের অভাবেই এই পদক্ষেপ নিতে হয়েছে।

তিনি আরও জানান, দেশের সমস্ত প্রতিষ্ঠানের কাজকর্ম স্থগিত করা হয়েছে এবং মন্ত্রণালয়ের প্রধানরাই নিয়মিত দায়িত্ব পালন করে যাবেন।

তিনি বলেন, বাইরের বিশ্বের সব অংশীদারদের হস্তক্ষেপ না করার জন্য বলা হচ্ছে, পরিস্থিতি স্থিতিশীল না হওয়া পর্যন্ত স্থল ও আকাশ সীমান্ত বন্ধ রাখা হয়েছে।

প্রতিবেশী দেশ মালিতে ভারী অস্ত্রে সজ্জিত রাশিয়ান ভাড়াটে বাহিনী ওয়াগনার গ্রুপের সদস্যরা জিহাদি বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে লড়াই করতে সে দেশের সামরিক সরকারকে সাহায্য করছে।

ওয়াগনার গ্রুপের তৎপরতা এবং সাহারা মরুভূমির দক্ষিণে সাহেল অঞ্চলের অস্থিরতা নিয়ে পশ্চিমা বিশ্ব এমনিতেই যথেষ্ট উদ্বেগের মধ্যে রয়েছে। নিজেরের ভেতরে এই অস্থিরতা সেই উদ্বেগকে আরও বাড়িয়ে দেবে।

আফ্রিকায় রুশ প্রভাব বিস্তারে বিশেষভাবে আগ্রহী প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এখন সেন্ট পিটার্সবার্গে আফ্রিকান নেতাদের সাথে বৈঠক করতে সম্মেলন করছেন।

পশ্চিম আফ্রিকার অর্থনৈতিক জোট ইকোওয়াস এক বিবৃতিতে বলেছে, নিজেরে বল প্রয়োগ করে ক্ষমতা দখলের প্রচেষ্টাকে তারা কঠোর ভাষায় নিন্দা জানায়।

নিজের সরকার দুটি ইসলামপন্থী বিদ্রোহী গ্রুপের বিরুদ্ধে লড়াই চালাচ্ছে। একটি দেশে দক্ষিণ-পশ্চিমে - যেটি ২০১৫ সালে মালিতে ঢুকে পড়েছিল।

আর অন্যটি নিজেরের দক্ষিণ-পূর্বে - যাদের সাথে নাইজেরিয়াতে অবস্থিত জিহাদিদের যোগাযোগ রয়েছে।

আল-কায়েদা এবং ইসলামিক স্টেট – এ দুটি গোষ্ঠীর সাথে সম্পর্কযুক্ত জোটবদ্ধ জঙ্গি গোষ্ঠীগুলো এখন নিজেরে সক্রিয় রয়েছে।

প্রেসিডেন্ট বাজুম ২০২১ সালে গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত হয়েছিলেন। ফ্রান্স এবং অন্যান্য পশ্চিমা দেশগুলির তিনি একজন ঘনিষ্ঠ মিত্র।

উনিশশো ষাট সালে ফ্রান্সের কাছ থেকে স্বাধীনতার পর নিজেরে চারটি সামরিক অভ্যুত্থান ঘটেছে। এবং সেই সাথে সে দেশে অসংখ্যবার অভ্যুত্থানের প্রচেষ্টা হয়েছে।