বিশ্ব কুদস দিবস আজ: মুসলমানদের জেরুজালেমকে মুক্ত করার প্রত্যয়


আন্তর্জাতিক ডেস্ক

আরটিএ্নএন

জেরুজালেম: আজ আন্তর্জাতিক আল কুদস দিবস। আল কুদস বা বায়তুল মুকাদ্দাস মুসলমানদের কাছে অত্যন্ত প্রিয়তম স্থানগুলোর একটি, যেখানে রয়েছে মুসলমানদের প্রথম কেবলা মসজিদুল আকসা। বায়তুল মুকাদ্দাস বা জেরুজালেম শুধু মুসলমান নয়, বিশ্বের ইহুদি ও খ্রিস্টানদের কাছেও প্রিয় ও পবিত্র স্থান।

মুসলমানদের প্রথম কিবলা মসজিদুল আকসা ও জেরুজালেম নগরী আল-কুদসকে মুক্ত করার প্রত্যয় নিয়ে ১৯৭৯ সাল থেকে প্রতি বছর রমজানের শেষ শুক্রবার পালন করা হয় বিশ্ব কুদস দিবস।

নবী মুহম্মদ মুস্তফা সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পবিত্র মেরাজ গমনকালে মসজিদুল আকসায় নামাজ আদায় করেন। তিনি ছিলেন নামাজে অংশগ্রহণকারী সব নবী-রাসুলের ইমাম।

এ ছাড়া বনি ইসরাইলের নবী-রাসুলরা যেমন হজরত মুসা, দাউদ, সুলায়মান এবং ঈসা (আ) এর দ্বীন প্রচারের কেন্দ্র ছিল এই ফিলিস্তিন ভূমি। হজরত ইবরাহিম (আ) এর মাজার এখনো ফিলিস্তিনের আল-খলিল শহরে রয়েছে। হাজারো নবী-রাসুলের স্মৃতিচিহ্ন বুকে নিয়ে অবস্থান করছে ফিলিস্তিনের ভূখণ্ডে আল কুদস, মসজিদুল আকসা এবং আশপাশের এলাকাগুলো। সুতরাং বোঝাই যাচ্ছে, আল কুদসের গুরুত্ব ধর্মপ্রাণ মানুষের কাছে কত বেশি।

ইহুদিবাদী ইসরাইল ফিলিস্তিনি ভূখণ্ড জবর দখল করে বর্বর নির্যাতনের ধারা অব্যাহত রেখেছে ৭০ বছর অতিক্রম করেছে। ফিলিস্তিনিদের আশা আকাঙ্ক্ষাকে জাগ্রত রাখা এবং ইসরাইলের প্রতি বিশ্ব মুসলমানের ঘৃণা প্রকাশ হয় এই কুদস দিবস পালনের মধ্য দিয়ে। এটি এখন শুধুমাত্র ফিলিস্তিনিদের দিবস নয়, এটি এখন সাম্রাজ্যবাদী শক্তির বিরুদ্ধে প্রতিবাদের দিবসে পরিণত হয়েছে। তাই প্রতি বছর এই দিবস পালনে মানুষের মাঝে আগ্রহও বাড়ছে।

বিশ্ব কুদস দিবস পালনের উদ্দেশ্য হচ্ছে, নির্যাতিত ফিলিস্তিনিদের ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্ঠা করা। আর আধিপত্যবাদী শক্তির বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানো। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা ফিলিস্তিনি শরণার্থীদেরকে তাদের মাতৃভূমিতে ফিরিয়ে আনা।

কুদস দিবসের আরেকটি প্রধান লক্ষ্য হচ্ছে, বায়তুল মোকাদ্দসকে রাজধানী করে এবং মুসলমান, খ্রিস্টান ও ইহুদিদের নিয়ে স্বাধীন ফিলিস্তিন সরকার গঠনের ব্যবস্থা করা।

১৯৭৯ সালে ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের প্রতিষ্ঠাতা ইমাম খোমেনী রমজান মাসের শেষ শুক্রবারকে বিশ্ব কুদস দিবস হিসেবে ঘোষণা করেন। তার আহ্বানে সাড়া দিয়ে ওই বছর থেকে বিশ্বব্যাপী এ দিবস পালন করা হচ্ছে। ১৯৬৭ সাল থেকে ইসরাইল বায়তুল মুকাদ্দাস দখল করে আছে।

এ দিবসে বিশ্বের মুসলমানরা ইসরাইল বিরোধী বিক্ষোভ মিছিলে অংশ নেন এবং আমেরিকা ও ইসরাইলের পতাকায় অগ্নিসংযোগ করেন। তারা ইহুদিবাদী ইসরাইলের দখলদারিত্ব থেকে আল-কুদসকে মুক্ত করার শপথ নেন।

কিন্তু এ বছর প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের কারণে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার বিধিবিধান পালন করার স্বার্থে বিশ্ব কুদস দিবসের মিছিল অনুষ্ঠিত হবে না।

তবে মুসলমানদের সবচেয়ে বড় সমস্যা হিসেবে ফিলিস্তিন সংকটের গুরুত্ব বিশ্ববাসীর সামনে তুলে ধরার জন্য ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহিল উজমা খামেনেয়ী গুরুত্বপূর্ণ ভাষণ দেবেন। ইরান সময় আজ (শুক্রবার) বেলা ১২টায় টেলিভিশন, রেডিও এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে তাঁর ভাষণ সরাসরি সম্প্রচার করা হবে।

পার্সটুডের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ নেতার ভাষণ পাঠক ও শ্রোতাদের সামনে উপস্থাপনের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।