মত পাল্টে হাইড্রোক্সিক্লোরোকুইন ব্যবহার করতে বলছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আরটিএনএন
জেনেভা: করোনা ভাইরাসে আক্রান্তদের চিকিৎসায় হাইড্রোক্সিক্লোরোকুইন ওষুধকে গেমচেঞ্জার আখ্যা দিয়েছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। কিন্তু ট্রাম্পের গেমচেঞ্জারকে উড়িয়ে দিয়ে তা ব্যবহারে সতর্ক করে দিয়েছিল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা- ডব্লিউএইচও।
হাইড্রোক্সিক্লোরোকুইনের কার্যকারিতা নেই বলে ফল আসার পর ওষুধটি ব্যবহার না করার নির্দেশনার কয়েকদিন পরই সেই অবস্থান থেকে সরে আসল জাতিসংঘের স্বাস্থ্যবিষয়ক এই সংস্থাটি। তারা জানিয়েছে, কভিড-১৯ এর ক্ষেত্রে ওষুধটির কার্যকারিতা যাচাইয়ে ফের পরীক্ষা শুরু করবে।
বাংলাদেশ সময় বৃহস্পতিবার (৪ জুন) ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে এমন ঘোষণা দেন ডব্লিউএইচও’র প্রধান তেদ্রোস আধানম গাব্রিয়েসাস।
তিনি জানান, ম্যালেরিয়ার ওই ওষুধটি করোনার ক্ষেত্রেও কাজ করে কি-না তা পরীক্ষামূলক ব্যবহারে কোনো বাধা নেই।
এর আগে ২৫ মে করোনায় আক্রান্ত রোগীর নিরাপত্তার স্বার্থে হাইড্রোক্সিক্লোরোকুইনের ব্যবহারে সাময়িক নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিল ডব্লিউএইচও। এখন তারা বলছে, ওষুধটির পরীক্ষামূলক ব্যবহার বন্ধ করার ‘কোনো কারণ’ নেই।
হাইড্রোক্সিক্লোরোকুইন নিয়ে স্বাস্থ্য বিষয়ক বিখ্যাত জার্নালে প্রকাশিত এক গবেষণা প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছিল, করোনায় আক্রান্ত রোগীর চিকিৎসার ক্ষেত্রে এ ওষুধের কোনো কার্যকারিতা নেই। বরং ওষুধটি গ্রহণে রোগীর মৃত্যু ঝুঁকি বেড়ে যায়। এরপরই এ ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা আসে ডব্লিউএইচও’র।
নিষেধাজ্ঞা তোলে নেওয়ার ব্যাপারে আধানম জানান, রোগীর নিরাপত্তায় ‘পূর্ব সতর্কতার’ অংশ হিসেবে ওষুধটির ব্যাপারে সাময়িক নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছিল। ওষুধটি নিয়ে নিরাপত্তা সংক্রান্ত তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করা হচ্ছে।
তিনি জানান, মৃত্যুহার নিয়ে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে এ ব্যাপারে গঠিত কমিটির সুপারিশ হলো- ওষুধটি নিয়ে ট্রায়াল প্রটোকল বাতিলের কোনো কারণ নেই।
করোনা চিকিৎসায় হাইড্রোক্সিক্লোরোকুইনসহ অন্যান্য ওষুধেরও পরীক্ষা চলবে বলেও জানান ডব্লিউএইচও’র প্রধান। এসব ট্রায়ালে অংশ নেওয়ার জন্য ৩৫টি দেশে সাড়ে ৩ হাজার রোগী ঠিক করা হয়েছে জানানো হয়েছে।
শুরু থেকে হাইড্রোক্সিক্লোরোকুইনের পক্ষে অবস্থান নেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ওষুধটিকে ‘যুগান্তকারী’ হিসেবেও উল্লেখ করেন তিনি। করোনামুক্ত থাকতে নিজে এ ওষুধ গ্রহণ করেন বলেও জানান তিনি। ওষুধটির সাফাই গাইতে দেখা গেছে মিত্র ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট জাইর বোলসোনারোসহ আরও অনেককে।
এই ওষুধ ব্যবহার নিয়ে সতর্ক হওয়ার পরামর্শ দিয়ে সম্প্রতি পদ হারিয়েছেন বায়োমেডিক্যাল অ্যাডভান্সড রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট কর্তৃপক্ষের (বিএআরডিএ) পরিচালক রিক ব্রাইট। এক বিবৃতিতে তিনি দাবি করেছেন, ঝুঁকিপূর্ণ ওষুধের ব্যবহার নিয়ে ট্রাম্পের সঙ্গে মতবিরোধের জের ধরে তাকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।