ইসলামের উচ্চাকাঙ্ক্ষী মিশন
আমিল ইমানি: প্রত্যেক সংগঠনের একটি সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য থাকে অথবা কোনো সুনির্দিষ্ট উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে এগিয়ে যায়। আর এই সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য অর্জনের জন্য এটি দিন রাত পরিশ্রম করে।
ইসলামকে ঠিক এরকম একটি সংগঠন হিসেবে চিন্তা করা যাক যার একটি সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য এবং উদ্দেশ্য রয়েছে। আপনি হয়ত জিজ্ঞেস করতে পারেন ইসলামের উদ্দেশ্য তাহলে কি?
যেখানে আমাদের সহকর্মী আমেরিকানরা ঝিমিয়ে পড়েছে অথবা অন্তত তারা আর আগের মত সাহসী ভঙ্গিমায় আর অন্যদিকে তাদের বিপরীত হিসেবে মুসলিমগণ কখনো ঝিমিয়ে পড়ে নি এবং কখনো বিশ্ব শাসন করার সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য থেকে বিচ্যুত হয়নি। তারা প্রাথমিকভাবে তাদের লক্ষ্য স্থির করেছে অমুসলিম দেশসমূহের দিকে- আর এ দিক থেকে ইউরোপ এবং যুক্তরাষ্ট্র সবার উপরে।
আমি ইসলামকে খুব ভালোভাবেই জানি, দয়া করে আমাকে বলতে দিন যে, মুসলিমদের কাছে তাদের লক্ষ্যই হচ্ছে সব কিছু। ইসলাম তার সব কিছুই করে কোনো সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যকে সামনে রেখে।
ইসলামের চূড়ান্ত লক্ষ্য হচ্ছে পুরো বিশ্বকে একটি ইসলামিক উম্মাহ’র মধ্যে এনে একে ইসলামি শরিয়া মতে শাসন করা।
ইসলামের মধ্যকার বিভিন্ন সংগঠন তাদের মধ্যে প্রতিনিয়ত বিভিন্ন ইস্যুতে বিভক্ত হয়ে আছে। তাদের প্রত্যেকেই বিশ্বাস করে যে, তারাই একমাত্র নবী মুহাম্মদ (সা.) এবং মহান আল্লাহর পথে রয়েছে। তবে বর্তমানে, তাদের উচিত সকল অবিশ্বাসীদের পরাজিত করার মহান লক্ষ্যকে সামনে রেখে কাজ করা।
মুহাম্মদ (সা.) বার বার তার প্রতিপক্ষদের সাথে বিভিন্ন শান্তি চুক্তি সম্পন্ন করেছেন শুধুমাত্র তাদেরকে বিচ্ছিন্ন করে দেয়ার জন্য যতক্ষণ অবধি না তিনি তার চূড়ান্ত লক্ষ্যে পৌঁছিয়েছেন। বর্তমান বিশ্বে, ইসলামের কাজসমূহ কিছু প্রভাবশালী ধর্মীয় ব্যক্তিদের ফতোয়া দ্বারf নিয়ন্ত্রিত হচ্ছে।
উদাহরণ স্বরূপ- ইরানের ইসলামী বিপ্লবের জনক আয়াতুল্লাহ খামেনি কিছু উল্লেখযোগ্য ফতোয়া দিয়েছিলেন। পশ্চিমা বিশ্বে যেগুলোকে খামেনির ফতোয়া নামে বহুল পরিচিত। তিনি ‘The Satanic Verses’ নামক বই লিখার জন্য সালমান রুশদি নামের ব্যক্তিকে মৃত্যুদণ্ডের ফতোয়া জারি করেছিলেন।
মুসলিমদের চিন্তার সাথে পশ্চিমাদের চিন্তার যে সূক্ষ্ম অমিল হচ্ছে তা হচ্ছে- সকল মুসলিমই অদৃষ্টবাদী। উদাহরণ স্বরূপ- মুসলিমগণ তাদের প্রায় সকল বিবৃতির সাথেই শর্ত জুড়ে দেয়, যেমন- ‘যদি আল্লাহ ইচ্ছা করেন, তবে আমি তোমাকে একদিন না একদিন দেখে নিব’, ‘আল্লাহর ইচ্ছায় আপনি এটা ঘরেই করতে পারবেন’, ‘আল্লাহ চাইলে আপনার কাজ হয়ে যাবে’ ইত্যাদি।
মুসলিমদের কাছে আল্লাহ সকল কাজের মধ্যেই রয়েছেন। আল্লাহ তার অদৃশ্য হাতের মাধ্যমে সব কিছুর পরিচালনা করছেন। যদি কোনো কিছু ঘটে তবে তা আল্লার ইচ্ছাতেই ঘটেছে। আর যদি প্রত্যাশার বিপরীত হয় তবে তাও আল্লাহর ইচ্ছায় হয়েছে।
পবিত্র কুরআনে মহান আল্লাহ ঘোষণা দিয়েছেন, ‘আর তাদের সাথে যুদ্ধ করতে থাক যতক্ষণ না ভ্রান্তি শেষ হয়ে যায়; এবং আল্লাহর সমস্ত হুকুম প্রতিষ্ঠিত হয়ে যায়। তারপর যদি তারা বিরত হয়ে যায়, তবে আল্লাহ তাদের কার্যকলাপ লক্ষ্য করেন।’
উপসংহার: এখানে কোনো সন্দেহ নেই যে, ইসলামের চূড়ান্ত লক্ষ্য হচ্ছে ধর্মীয়ভাবে বিশ্বকে শাসন করা যার মাধ্যমে শরিয়া আইন প্রয়োগ করে সমাজের সকল কিছুই নিয়ন্ত্রণ করা যাবে, যেখানে মসজিদ এবং রাষ্ট্রের মধ্যকার, ধর্ম এবং স্বাধীনতার মধ্যকার কোন ধরণের ভেদাভেদ থাকবে না।
সূত্র: আমেরিকানথিংকার ডট কম।